ডিজিট পার্টনার হন
ডিজিটের 35,000+ পার্টনার 674 কোটি+ রোজগার করেছেন।

শিক্ষার্থীরা বিনা বিনিয়োগে অনলাইনে টাকা রোজগার করবেন কীভাবে?

ছাত্রাবস্থা একজন ব্যক্তির জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তবে পড়াশুনা করা একটি সর্বক্ষণের কাজ এবং তাই যেসকল শিক্ষার্থীরা অল্প টাকা রোজগার করতে চান তারা পার্ট-টাইম কাজের খোঁজ করা শুরু করেন যা তাদের লেখাপড়ায় ক্ষতি করে না।

শিক্ষার্থীদের আরও একটা ভাবনা হল, বড় বিনিয়োগ না করে কীভাবে অনলাইনে টাকা রোজগার করবেন বা এমন কোনও কাজ খুঁজবেন, যার জন্য খুব কম অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়।

আর এখানেই রয়েছে সুখবর। আসলে শিক্ষার্থীদের জন্যে বেশ কিছু পার্ট-টাইম কাজ রয়েছে যেখানে তারা বাড়ি বসেই টাকা রোজগার করতে পারবেন।

শিক্ষার্থী হয়ে অনলাইনে টাকা রোজগার করার সবচেয়ে ভালো উপায়গুলি কী-কী?

1. পিওএসপি হিসাবে ইনস্যুরেন্স বিক্রয় করা

একজন পিওএসপি বা পয়েন্ট অফ সেলস্‌ পার্সন হওয়া ও ইনস্যুরেন্স বিক্রি করা শিক্ষার্থীদের জন্যে একটি লাভজনক পার্ট-টাইম কাজ হতে পারে। পিওএসপি হলেন একজন ইনস্যুরেন্স এজেন্ট যে একটি ইনস্যুরেন্স কোম্পানির সাথে তাদের ইনস্যুরেন্স প্রোডাক্টগুলি অনলাইনে বিক্রি করার জন্যে কাজ করেন।

  • এর জন্যে কী-কী প্রয়োজন? - আপনার বয়স অবশ্যই 18 বছরের বেশি হতে হবে এবং ক্লাস 10 পাস করতে হবে। আপনাকে আইআরডিএআই দ্বারা প্রদত্ত 15-ঘণ্টার একটি আবশ্যক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে।
  • আপনি কত টাকা রোজগার করতে পারবেন? - আপনার রোজগার আপনার বিক্রয় করা পলিসির সংখ্যার ওপর নির্ভর করবে। তাই আপনি যত বেশি পলিসি বিক্রয় করবেন তত বেশি রোজগার করতে পারবেন।
  • আপনি কি এই কাজটি করে যেতে পারেন?  - হ্যাঁ, জদি আপনার বিক্রয় করার ক্ষমতা থাকে তবে আপনি পরবর্তীকালে এটিকে একটি ফুল-টাইম কাজ হিসাবে করতে পারেন।

পিওএসপি এজেন্ট হওয়ার ধাপ, প্রয়োজনীয়তা ও নিয়মাবলী সম্পর্কে এখানে বিস্তারিত জানুন।

2. ফ্রিল্যান্সিং শুরু করুন

যদি আপনার লেখালেখি, প্রোগ্রামিং, এডিটিং, ফটোগ্রাফি, ডিজাইনিং বা এই ধরনের অন্য ভাল কোনও দক্ষতা থাকে, তবে আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে অনলাইনে টাকা রোজগার করতে পারেন। আপনাকে কেবল আপওয়ার্ক, ফাইবার বা ট্রুল্যান্সার জাতীয় পোর্টালে রেজিস্টার করাতে হবে। তারপর আপনি সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে আপনার দক্ষতা দেখাতে পারবেন।

  • এর জন্যে কী-কী দরকার?  - আপনার যদি বাজারের চাহিদা অনুযায়ী যথেষ্ট দক্ষতা থাকে, তবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং পোর্টালে রেজিস্টার করতে পারবেন, যদিও এর জন্যে সামান্য ফি দিতে হতে পারে।
  •  আপনি কত টাকা রোজগার করতে পারবেন? - আপনি কী ধরনের কাজ করছেন এবং তার জন্যে কত সময় দিতে পারছেন তার ওপরে আপনার রোজগার নির্ভর করবে।

আপনি কি এই কাজটি করে যেতে পারবেন?- হ্যাঁ, আপনি কী ধরনের কাজ করছেন তার ওপর ভিত্তি করে আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসাবে ফুল-টাইম কাজ করতে পারবেন।

3. অনলাইনে পড়ানো শুরু করুন

শিক্ষার্থীরা সর্বক্ষণ নতুন কিছু শিখছেন, তাই এই ধরনের জ্ঞান বিতরণ করে একজন সহজেই অনলাইনে টাকা রোজগার করতে পারেন। আপনি স্কুলের বাচ্চাদের পড়ান বা প্রাপ্তবয়স্ক যারা নতুন কিছু শিখতে চান তাদের জন্যে কিছু কোর্স প্রদান করুন, আপনার কেবল একটি দ্রুত গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট কানেকশান প্রয়োজন।

আপনি একটি ভার্চুয়াল টিউটরিং প্ল্যাটফর্ম যেমন ইউডেমি, স্কিলশেয়ার বা কোর্সেরাতে সাইন আপ করতে পারেন বা সোশ্যাল মিডিয়াতে বন্ধু ও আত্মীয়বর্গের মধ্যে আপনার অনলাইন টিউটরিং ক্লাসের কথা জানাতে পারেন।

  • এর জন্যে কী-কী দরকার? - এক্ষেত্রে খুব কম টাকার বিনিয়োগ প্রয়োজন, তবে আপনাকে আপনার পড়ানোর দক্ষতাকে উন্নত করতে হবে।
  • আপনি কত টাকা রোজগার করতে পারবেন?  - আপনার অভিজ্ঞতার মাত্রা ও কী বিষয় আপনি পড়াচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে আপনি প্রতি ঘণ্টায় ₹200–500 টাকা অবধি রোজগার করতে পারেন।

আপনি কি এই কাজটি করে যেতে পারবেন? - টিউটরিং একটি উপযোগী ফুল-টাইম কাজ নাও হতে পারে, তাই আপনি এটিকে পার্ট-টাইম কাজ হিসাবে করে যেতে পারেন বা যদি আপনি এর জন্যে দক্ষ হন তবে আপনার শিক্ষাক্ষেত্রে পড়ানোর কাজ দেখতে পারেন।

4. ডেটা এন্ট্রির কাজ খুঁজুন

যে সব শিক্ষার্থী বিনা বিনিয়োগে অনলাইনে টাকা রোজগার করার চেষ্টা করছেন তাদের জন্যে ডেটা এন্ট্রির কাজ আরেকটি অপশন হতে পারে। যেহেতু এটি সুবিধা অনুযায়ী করা যায় তাই এটি পার্ট-টাইম কাজ হিসাবে বেশ ভালো।

আপনাকে কেবল একটি বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট যেমন ফ্রিল্যান্সার, ডেটা প্লাস, অ্যাক্সিয়ন ডেটা এন্ট্রি সার্ভিসেস বা গুরুতে রেজিস্টার করতে হবে এবং আপনি সারা বিশ্ব থেকে ডেটা এন্ট্রির কাজ গ্রহণ করতে পারবেন। তবে আপনার অ্যাকাউন্টের তথ্য দেওয়ার আগে মনে করে এদের বৈধতা যাচাই করে নেবেন।

  • এর জন্যে কী-কী দরকার? - আপনার কাছে একটি কম্পিউটার থাকা প্রয়োজন ও এক্সেল এবং অন্যান্য মাইক্রোসফট টুলগুলি সম্পর্কে আপনার জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
  • আপনি কত টাকা রোজগার করতে পারবেন? - একটি ডেটা এন্ট্রির কাজে আপনি প্রতি ঘণ্টায় ₹300 থেকে ₹1,500 টাকা রোজগার করতে পারবেন।
  • আপনি কি এই কাজটি করে যেতে পারবেন? - ডেটা এন্ট্রির কাজগুলি সাধারণত পার্ট-টাইম কাজ হিসাবেই করা হয়।

5. বিটা টেস্টিং অ্যাপ ও ওয়েবসাইট

যেহেতু প্রায় সকল শিক্ষার্থীর কাছেই আজকাল স্মার্টফোন বা কম্পিউটার থাকে, তাই পার্ট-টাইমে টাকারোজগার করার একটি ভালো অপশন হল অ্যাপ ও ওয়েবসাইট টেস্ট করা। যখন কোম্পানি ও অ্যাপ ডেভেলপাররা একটি নতুন অ্যাপ বা ওয়েবসাইট তৈরি করেন, তারা যে কাজটি করার জন্যে কিছু ব্যবহারকারী নিয়োগ করেন, সেটিই হল 'বিটা টেস্টিং'। আপনাকে কেবল এদের সাইট বা অ্যাপগুলি পরীক্ষা করে দেখতে হবে ও আপনার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা রিপোর্ট করতে হবে এবং এগুলি আমজনতার কাছে পৌঁছানোর আগে এতে কোনও সমস্যা বা ত্রুটি আছে কিনা তা সনাক্ত করতে হবে।

আপনি এই ধরনের কাজের জন্যে বিটা টেস্টিং, টেস্টার ওয়ার্ক, টেস্ট.আইও, বা ট্রাই মাই ইউআই জাতীয় সাইটে সাইন আপ করতে হবে।

  • এর জন্যে কী-কী দরকার? - আপনার কোনও বিশেষ জ্ঞানের প্রয়োজন নেই তবে আপনি কী প্রোডাক্টের টেস্টিং করছেন তার ওপর ভিত্তি করে আপনার একটি আপ-টু-ডেট অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস বা উইন্ডোস অপারেটিং সিস্টেম থাকা প্রয়োজন।
  • আপনি কত টাকা রোজগার করতে পারবেন? - বিটা টেস্টিং প্রক্রিয়া এবং এর সাথে আপনার অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে আপনি প্রায় ₹1000 থেকে ₹3000 টাকা রোজগার করতে পারবেন।
  • আপনি কি এই কাজটি চালিয়ে যেতে পারবেন? - অ্যাপ ও ওয়েবসাইট টেস্টিং সাধারণত পার্ট-টাইম কাজ হিসাবে করা হয় তবে যদি আপনার প্রোগ্রামিং বা সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের অভিজ্ঞতা থাকে তবে আপনি এই অভিজ্ঞতাকে ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে পারবেন।

তাই যেসকল শিক্ষার্থীরা অনলাইনে টাকা রোজগার করার চেষ্টা করছেন তারা সহজেই তাদের খালি সময়কে আরো একটু ভালো করে কাজে লাগিয়ে তা করতে পারেন। কেবল নিম্নলিখিত কাজগুলি করে নকল এজেন্সি, স্ক্যাম ও ঠকে যাওয়া থেকে সতর্ক থাকুন:

  • যে-কোনও সাইটে সাইন আপ করার আগে সেটি ভালো ভাবে দেখে নিন ও এর রিভিউগুলি পড়ে নিন।
  • আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চায় এমন সাইটগুলি থেকে সতর্ক থাকুন।
  • এমন ওয়েবসাইট দেখুন যাদের অনেক কাজ রয়েছে কিন্তু আপনাকে খুব বেশি টাকা এরা দেবে না।
  • যে-কোনও কন্ট্র্যাক্ট সই করার আগে ভালো করে পড়ে নিন।

একবার এই সতর্কতাগুলি বজায় রাখলে আপনি বিনা বিনিয়োগে টাকা রোজগার করার এই সহজ ও সময় উপযোগী উপায় বেছে নিতে পারবেন।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

পার্ট-টাইম কাজগুলি শিক্ষার্থীদের কীভাবে সাহায্য করে?

শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত হাতখরচ রোজগার করার জন্যে পার্ট-টাইম কাজগুলি খুবই ভালো উপায়। টাকা দেওয়ার পাশাপাশি একটি পার্ট-টাইম কাজ প্রশিক্ষণ ও কাজের অভিজ্ঞতা উভয়ই প্রদান করে, বিশেষ করে বদলিযোগ্য দক্ষতা যা আপনি পরবর্তীকালে ব্যবহার করতে পারবেন।

পার্ট-টাইম কাজ কি শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করে?

একটি পার্ট-টাইম কাজ করা খুবই উপকারী হতে পারে, কিন্তু কিছু জনের ক্ষেত্রে সর্বক্ষণের পড়াশুনার সাথে পার্ট-টাইম কাজ করা কঠিন হতে পারে। তাই, যদি আপনার ক্লান্ত লাগে বা যদি এটি আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে তবে আপনি কাজ করার আগে আবার ভাবতে পারেন।

শিক্ষার্থীদের জন্যে অনলাইন কাজগুলি কোথায় খুঁজে পাওয়া যায়?

যে সব শিক্ষার্থীরা অনলাইনে টাকা রোজগার করতে চান তাদের জন্যে আমরা ইতিমধ্যেই কিছু খ্যাত সাইট দেখেছি। তবে, যদি এই সোর্সগুলি কাজ না করে তবে আপনি মনস্টার বা লিঙ্কড্‌ইন-এর মতো কাজের ওয়েবসাইটগুলিতে সাইন আপ করতে পারেন। এছাড়াও আপনি এমন কিছু সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপের সাথে যুক্ত হতে পারেন যেখানে কাজের তালিকা পোস্ট করা হয়, আর যদি এই সমস্ত কিছুই ব্যর্থ হয় তবে পুরনো দিনের মতো আপনার বন্ধু বা আত্মীয় পরিজনদের কাছে সাহায্য চান।